শুক্রবার, আগস্ট ১৩, ২০১০

'কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থানসমূহ' এর 'মাথিনের কূপ, টেকনাফ' প্রসঙ্গে

দৈনিক রূপসীগ্রাম এর সূচনা সংখ্যার চাররঙা সাপ্লিমেন্টারি টেবলয়েডের লেখাগুলোয় চোখ বুলাচ্ছিলাম। এক জায়গায় (১৫-১৬ পৃষ্ঠায়) মং বা অঙের লেখা (উল্লিখিত শিরোনামের) দেখে আগ্রহ নিয়ে পড়ছিলাম। কিন্তু লেখাটির এক জায়গায় (মাথিনের কূপ, টেকনাফ উপ-শিরোনামের অংশে) এসে আমার মনে খটকা লাগল। সে অংশটুকু আমি এখানে হুবহু উদ্ধৃতি দিচ্ছি, ...চতুর্দশ বয়সী জমিদার কন্যা মাথিন ও ধীরাজ ভট্টাচার্যের নিখাদ প্রেমের ঐতিহাসিক নিদর্শন এ মাথিনের কূপ। গোত্র আভিজাত্যের প্রতিবন্ধকতায় ধীরাজ জমিদার মগ কন্যাকে বিয়ে করতে ব্যর্থ হন। সুমধুর প্রেমের করুণ বিচ্ছেদে প্রেম সম্রাজ্ঞী তিলে তিলে মৃত্যু বরণ করেন। এতে শাশ্বত অকৃত্রিম প্রেমের এক ইতিহাস বিরচিত হয়। মাথিনের অতৃপ্ত প্রেমের অমোঘ সাক্ষী মাথিনের কূপ।
লেখক মং বা অং তাঁর ঙারো রাখাইন গ্রন্থে মাথিনের কূপ প্রসঙ্গে ঠিক উল্টো কথাই লিখেছিলেন। আমি এখানে মং বা অঙের গ্রন্থ থেকে দুটো অংশ হুবহু উদ্ধৃতি দিচ্ছি, ...১৯৮৪ সালের আগ পর্যন্ত টেকনাফের অন্যান্য পাতকূয়ার মতই এটি একটি সাধারণ পাতকূয়া ছিল মাত্র। টেকনাফের তরুণ সাংবাদিক আবদুল কুদ্দুস রানা ধীরাজ ভট্টাচার্যের ‘যখন পুলিশ ছিলাম’ উপন্যাসে বর্ণিত কাহিনীর আলোকে ‘দুটি জীবনের মিলন ও বিচ্ছেদের সাক্ষী’ শিরোনামে ধীরাজ-মাথিনের প্রেম কাহিনী, অসম ও অতৃপ্তি প্রেমের নীরব সাক্ষী হিসেবে কূপটিকে বর্ণনা করে কূপের পাশে একটা সাইনবোর্ড টাংগিয়ে দেন। (পৃষ্ঠা ১৪৫)
...লাইলী-মজনু, রোমিও-জুলিয়েট এর সত্য প্রেম কাহিনী নিয়ে নাটক, সিনেমা আছে, থাকবে এতে কারো দ্বিমত নেই। ধীরাজ-মাথিনের প্রেম কাহিনী যেখানে সত্যাসত্য নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন সে কাহিনী নিয়ে টেলিফিল্ম নির্মাণ হওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত হয়েছে তা সাধারণ পাঠক মাত্রই অনুধাবন করতে পারবেন। (পৃষ্ঠা ১৪৮)
এ ব্যাপারে মং বা অঙের সঙ্গে মুঠোফোনে আমি কথা বলেছি। তিনি জানালেন, মাথিনের কূপ নিয়ে তিনি যা লিখেছেন তা ছাপা হয়নি, ছাপা হয়েছে কেবল ধীরাজ ভট্টাচার্যের কল্পকাহিনী।
এখন আমার প্রশ্ন, সম্পাদক কি একজন লেখকের বক্তব্যকে নিজের মতো উপস্থাপন করতে পারেন?

মং হ্লা প্রু পিন্টু
রামু, কক্সবাজার
maung.pintu@gmail.com

কোন মন্তব্য নেই: