মঙ্গলবার, জানুয়ারী ২৬, ২০১০

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল ও তার কর্মী বাহিনী

ব্যক্তি মানুষকে স্বাতন্ত্র্য করে তোলে তার আদর্শ। এটা সবার বেলায় প্রযোজ্য। এটা সামষ্টিক ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আদর্শবান মানুষ কখনো আপোশ করেন না বা করতে পারেন না। আদর্শবান মানুষকে আমি অন্তর থেকে শ্রদ্ধা করি, তিনি যদি আমার বিরুদ্ধাচারী কিংবা ভিন্নমতাবলম্বীও হন তা হলেও।
আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো একটা আদর্শ নিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য দলের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে। এখন আমার প্রশ্ন, রাজনৈতিক দলগুলোর লক্ষ্য কি শুধুই ক্ষমতায় যওয়া? পাঁচ বছর ক্ষমতায় থেকে আমাদের দলীয় সরকারগুলো দেশকে কতটুকু এগিয়ে নিয়েছে বা নিতে পেরেছে?
আমরা জানি, রাজনৈতিক দলগুলোর মূল চালিকা শক্তি তার কর্মী বাহিনী। দলীয় কর্মীদের মধ্যে যাঁরা স্বীয় দলের গুণগান করেন তাঁরা দলীয় আদর্শকে কতটুকু বুকে ধারণ করেন? আমার মনে হয় না যে, তাঁরা আদর্শের কারণে দলীয় রাজনীতি করেন।
আমার এই বয়সে আমি যা দেখেছি তাতে আমার মনে হয়েছে, বাংলাদেশের অধিকাংশ রাজনীতিবিদ বা রাজনৈতিক কর্মী সংকীর্ণ (ব্যক্তি) স্বার্থেই (এটা হতে পারে নিজের বা পারিবারিক প্রভাব-প্রতিপত্তি অক্ষুন্ন রাখা, দলের প্রভাব খাটিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা, মোট কথা নিজের আখের গোছানো) রাজনীতি করেন। আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করলে ক্ষমতার পালা বদলের সময় লেবাস পরিবর্তনের ঘটনা এত বেশি ঘটত না। জেলা-উপজেলা পর্যায়ের অধিকাংশ রাজনৈতিক কর্মীরই আদর্শের কোনো বালাই নেই। যদি থাকত, তা হলে স্বাধীনতার এই আটত্রিশ বছরে আমাদের অর্জন চোখে পড়ার মতো হত।

বৃহস্পতিবার, জানুয়ারী ২১, ২০১০

প্রসঙ্গ : দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ

মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হিসাবে গত সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগে বেতার-টিভিতে সরাসরি সম্প্রচারিত ভাষণে বলেছিলেন যে, তাঁর দল ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী বছরকে টার্গেট করে সরকারের যাবতীয় কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে। সে জন্য তিনি ভিশন ২০২১-এর কথা বলেছিলেন।
নির্বাচনের অব্যবহিত পরে সরকার গঠনের সময় মন্ত্রী পরিষদে অপেক্ষাকৃত তরুণ ও নতুন মুখ দেখে নির্দলীয় আমরাও আশাবাদী হয়েছি যে, ৩৭ বছর বয়সী বাংলাদেশকে এঁরাই গতি দেবেন এবং সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। বর্তমান সরকারের গৃহীত এ পর্যন্ত পদক্ষেপের কারণে সচেতন জনগণের আশাভঙ্গের তেমন কিছু ঘটেছে বলে আমার মনে হয়নি। তবে দুর্নীতি দমন, নির্মূল কিংবা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার ব্যাপারে সরকারের কোনো পদক্ষেপ বা কার্যক্রমই চোখে পড়ছে না। আজ একটি দৈনিকের খবর পড়ে দুর্নীতি মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে আমার মনে ক্ষীণ হলেও একটা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
দুর্নীতির ব্যাপারে এখনই কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে আমরা প্রিয় স্বদেশভূমির যে রূপ দেখব, তা কি এখনকার বাংলাদেশ থেকে ভিন্নতর কিছু হবে?

রবিবার, জানুয়ারী ১০, ২০১০

নির্বাচন ও সরকারি চাকরি ক্ষেত্রে মানসিকতা ও প্রক্রিয়ার পরিবর্তন চাই

বিগত শতকের আশির দশক থেকে বাংলাদেশের যে-কোনো পর্যায়ের নির্বাচনে (স্থানীয় সরকারের নিম্ন স্তর অর্থাৎ ইউপি নির্বাচন থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আর সরকারি চাকরির প্রার্থী হওয়াকে (যেমন : পুলিশ ও কাস্টমসের চাকরি, জেলা প্রশাসনের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর চাকরি, সিভিল সার্জনের নিয়ন্ত্রণাধীন স্বাস্থ্য সহকারীর চাকরি ইত্যাদি) সংশ্লিষ্টরা এক ধরনের বিনিয়োগ মনে করে। কারণ, এসব ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় কিংবা লাখ-লাখ টাকা লেনদেন ছাড়া নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া কিংবা চাকরি নামক সোনার হরিণটিকে ধরা যায় না। নির্বাচন বলুন আর চাকরিই বলুন প্রার্থীর প্রধান যোগ্যতা টাকা খরচ করার ক্ষমতা, যাকে আমরা বলে থাকি টাকার খেলা।
নির্বাচনে জেতার পর ওই জনপ্রতিনিধি তাঁর বিনিয়োগকৃত অর্থের গুণিতক পরিমাণ টাকা তাঁর ক্ষমতার মেয়াদে তুলে আনতে সচেষ্ট থাকেন (এটা হতে পারে কমিশন খেয়ে, নগদ প্রাপ্তির বিনিময়ে সুপারিশ করে, ভুয়া প্রকল্প বরাদ্দ দিয়ে, নিজের বা দলীয় সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে চাঁদা তুলে ইত্যাদি)। আর চাকরিপ্রার্থীরা চাকরি নামক সোনার হরিণটি হাতে পাওয়ার পর তাঁর প্রদত্ত ঘুসের টাকা সুদে-আসলে তুলতে শুরু করেন (যেমন : পুলিশের ক্ষেত্রে দিনকে রাত আর রাতকে দিন বানিয়ে, কাস্টমসের ক্ষেত্রে সরকারি কোষাগারকে তলানিতে নামিয়ে)। এ ক্ষেত্রে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে সংবাদ শিরোনাম হওয়া কোটিপতি কিংবা একাধিক ফ্ল্যাটের মালিক পিডিবি, বাখরাবাদ কিংবা তিতাস গ্যাস লিমিটেডের মিটার রিডারদের নাম স্মরণ করা যেতে পারে।
যাঁরা প্রয়োজনীয় যোগ্যতা (শিক্ষাগত ও চারিত্রিক) ছাড়া নির্বাচনে জেতেন কিংবা সরকারি চাকরি পান তাঁদের কাছ থেকে সাধারণ জনগণ কোনো পরিষেবা পায় না, পায় শুধু হয়রানি। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় যোগ্যতাবলে উতরিয়ে আসা জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা জনগণকে ঠিকই পরিষেবা দেন।
এবার মডেল থানা প্রসঙ্গ। আমার নিজ জেলার সদর থানাটি একটি মডেল থানা। একে কেন মডেল থানা বলা হল আমি ঠিক জানি না। মাসে দু-একটি ওপেন ডে অনুষ্ঠান করলেই মডেল থানা হয়ে যায়? কনস্টেবল থেকে এসআই পর্যন্ত (যেহেতু ওসি পদে সরাসরি নিয়োগ দেওয়া হয় না) স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় (কোনো রকম ঘুস ছাড়া) নিয়োগ দিয়ে তাঁদেরকে মডেল থানায় পোস্টিং দেওয়ার পরই সংশ্লিষ্ট থানাগুলো গুণগত মান পরিবর্তিত হয়ে মডেল থানায় রূপান্তরিত হবে, অন্যথায় নয়। কারণ, ঘুস ছাড়া চাকরি পাওয়া পুলিশ পরিষেবার বিনিময়ে ঘুস চাইবেন না।

শিক্ষকতা কি কেবলই জীবিকা?

তাঁরা চাকরিপ্রার্থী। তাই তাঁরা নিয়োগ পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়েছেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নিয়োগ পরীক্ষায় পত্রিকার খবর অনুযায়ী তাঁরা যে উপায় অবলম্বন করেছেন তা প্রশ্নাতীতভাবে অসৎ।
তাঁরা যে পেশার জন্য নিয়োগ পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়েছেন, উন্নত বিশ্বে ওই পেশাকে শ্রেষ্ঠ পেশা হিসাবে গণ্য করা হয়ে থাকে। পেশাটা হচ্ছে মানুষ গড়ার পেশা। যদিও তৃতীয় বিশ্বে পেশা আর জীবিকাকে আলাদা করে দেখার তেমন প্রবণতা নেই। তবু মানুষ গড়ার পেশাটাকে কেবলই জীবিকার উপায় মাত্র ভাবলে চলবে না। এর সঙ্গে আদর্শ, সততা, নৈতিকতা ইত্যাদি অন্যান্য জীবিকার তুলনায় বেশি মাত্রায় জড়িত।
সুতরাং, যাঁরা জীবিকার জন্য যেনতেন প্রকারে একটা চাকরি চান, তাঁরা এই পেশার মর্যাদাকে সমুন্নত রাখার পরিবর্তে ভূলুণ্ঠিতই করে বসবেন। কারণ, এই মহান পেশায় ফাঁকতালে ঢুকে পড়া মানুষ গড়ার তথাকথিত কারিগরদের হাত দিয়ে প্রখর নৈতিকতাবোধ সম্পন্ন ভবিষ্যৎ নাগরিক না বেরিয়ে কেবল সনদধারী তথাকথিত তারকাই বেরুতে থাকবে।
বর্তমান সরকার ঘোষিত ভিশন ২০২১-এর আলোকে সরকারের শিক্ষা-সংস্কার সংক্রান্ত চলমান প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিবর্গের উচিত শিক্ষকতা পেশার এই দিকটি ভেবে দেখা। কারণ, এর প্রভাব সুদূর প্রসারী।

সফ্টওয়্যার ছাড়াই তালা লাগান আপনার ফোল্ডারে

ফোল্ডারে তালা লাগানোর ব্যাপারটা মাঝে-মাঝে অতি দরকারি হলেও উইন্ডোজে এই সুবিধাটা এখনও দেওয়া হয়নি। হয়তো ব্যবহারকারীর নিরাপত্তার দিকে নজর রেখেই মাইক্রোসফ্ট এখনও উইন্ডোজে এই সুবিধাটা যুক্ত করেনি। যা-ই হোক প্রয়োজন কি আর বাধা মানে?
ফোল্ডারে তালা লাগানোর জন্য আমরা সাধারনত folder lock, folder guard  জাতীয় সফ্টওয়্যার ব্যবহার  করি। কিন্তু সফ্টওয়্যার ছাড়াও খুব সহজে আপনি আপনার ফোল্ডারে তালা লাগাতে পারেন। আসুন দেখা যাক কীভাবে?
ধরুন, D: drive  এর “Rocker” নামক ফোল্ডারটিতে আপনি তালা লাগাতে চান। তা হলে প্রথমে Notepad-এ নীচের লাইনটি লিখে ওই ড্রাইভে আর্থাৎ D: drive-এ Save করুন।
ren Rocker Rocker.{21EC2020-3AEA-1069-A2DD-08002B30309D}
এখন টেক্সট ফাইলটিকে Rename করে Lock.bat  করুন। এবার Lock.bat  এ ডাবল ক্লিক করুন। দেখুন আপনার ফোল্ডারটি উইন্ডোজ কন্ট্রোল প্যানেল এর আইকন হয়ে গেছে। এখন ফোল্ডারটি খুলতে চাইলে তা না খুলে উইন্ডোজ কন্ট্রোল প্যানেল ওপেন হবে।
এবার ফোল্ডারটির তালা খোলার জন্য ঐ ড্রাইভে আর্থাৎ D: drive -এ নীচের লাইনটি লিখে নতুন একটি টেক্সট ফাইল তৈরি করুন এবং তা  Save করুন।
ren Rocker.{21EC2020-3AEA-1069-A2DD-08002B30309D} Rocker
এখন টেক্সট ফাইলটিকে Rename করে key.bat  করুন। এবার key.bat -এ ডাবল ক্লিক করুন। দেখুন আপনার ফোল্ডারটি আবার পুর্বের অবস্থায় ফিরে গেছে। এখন আপনি ফোল্ডারটি খুলতে পারছেন।
আপনার ফোল্ডারের তালা-চাবি বানানো শেষ। আপনি এখন Lock.bat এবং key.bat  ফাইল দুটি দিয়ে আপনার ফোল্ডারে তালা লাগাতে পারবেন এবং তালা খুলতে পারবেন।

সোমবার, জানুয়ারী ০৪, ২০১০

প্রসঙ্গ : কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ

ক্সবাজারবাসীর দাবির মুখে ২০০৮ সালে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের যাত্রা শুরু হয় সদর হাসপাতাল সংলগ্ন অস্থায়ী কার্যালয়ে। এখানে ভর্তি হওয়া ছাত্র-ছাত্রীরা আবাসিক সুবিধা না থাকায় বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে লজিং থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। কক্সবাজার হাসপাতালের ডাক্তারদের দিয়ে দায়সারাভাবে পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাবে সঠিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।
সরকার কলেজের জন্য শহরতলীর পাওয়ার হাউজের উত্তর পাশে ৩৩ একর জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে অনেক আগে। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হচ্ছে না। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার মন্ত্রণালয়ে ফাইল পাঠানোর পরও সেখানে আটকে রাখা হচ্ছে। এদিকে আগামী জুনের মধ্যে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলে এর জন্য বরাদ্দকৃত এডিবি'র ২৭ কোটি টাকা ফেরত চলে যাবে। বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত গেলে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ প্রকল্পটি বাতিল হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে ৫৪ জন শিক্ষার্থী প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছে। গত বছর ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছে। এমতাবস্থায় এখানে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ অনিশ্চিত অবস্থায় নিপতিত হয়েছে।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ নিয়ে একটি মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। কক্সবাজার সিভিল সোসাইটি'র পক্ষ থেকে আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে প্রকল্পের কাজ শুরু করার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। তা না হলে আগামী পয়লা ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে গণঅনশন কর্মসূচি পালন করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়।